!-- your other meta element -->
ফিলিস্তিনের দখলকৃত ভূমিতে ইসরায়েলের তৈরি করা অবৈধ বসতি থেকে উৎপাদিত পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়নের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়ারল্যান্ড। মঙ্গলবার (২৭ মে) দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোনো সদস্য রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটিই প্রথম এমন পদক্ষেপ। খবর: এএফপি ও আরব নিউজ।
আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ফিলিস্তিনি দখলকৃত ভূমির অবৈধ বসতি থেকে পণ্য বাণিজ্য নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়নের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে আমাদের বাধ্যবাধকতা।’
এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি হিসেবে গত বছর আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) দেওয়া রায়ের ওপর নির্ভর করা হচ্ছে। উক্ত রায়ে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী সায়মন হ্যারিস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ একটি ছোট ইউরোপীয় দেশ যদি এই উদ্যোগ নেয়, আমি আশা করি তা অন্য দেশগুলোকেও অনুপ্রাণিত করবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা সম্ভবত পশ্চিমা বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা এই ধরনের আইন প্রণয়ন বিবেচনা করছি। আশা করি ইউরোপের আরও দেশ আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে।’
ডাবলিনের এই সিদ্ধান্তের এক সপ্তাহ আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৯৯৫ সালে স্বাক্ষরিত ইইউ-ইসরায়েল অ্যাসোসিয়েশন অ্যাগ্রিমেন্ট পর্যালোচনার নির্দেশ দেয়, যা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি। ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কায়া ক্যালাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের ‘একটি শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ’ এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে।
তবে আয়ারল্যান্ডের এই নিষেধাজ্ঞা মূলত প্রতীকী হবে বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ দখলকৃত এলাকা থেকে তাদের বাণিজ্যের পরিমাণ খুবই নগণ্য। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ফল, শাকসবজি ও কাঠের মতো পণ্যের বাণিজ্যের মোট মূল্য ছিল ১০ লাখ ইউরোরও (প্রায় ১১ লাখ ডলার) কম। তা সত্ত্বেও, মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই পদক্ষেপ একটি শক্তিশালী প্রতীকী বার্তা বহন করবে।
ক্রিশ্চিয়ান এইড আয়ারল্যান্ডের নীতিনির্ধারক কনর ও’নিল বলেন, ‘ইউরোপ দীর্ঘদিন ধরে বসতিগুলোকে অবৈধ বলে আসছে, কিন্তু একইসঙ্গে সেগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তাও দিয়ে গেছে। এই আইন সেই দ্বিচারিতার অবসান ঘটাতে পারে। এই প্রথমবার আমরা শুধু নীতিগত বক্তব্য নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইনটির চূড়ান্ত খসড়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। তবে, বিলটি আগামী শরতের আগে আইনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম।।