!-- your other meta element -->
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার উত্তেজনায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যেকোনো ধরনের হামলা ভয়াবহ তেজস্ক্রিয় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান এবং উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
রাফায়েল গ্রসি বলেন, ‘ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ফলে সেখানকার পারমাণবিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতির দিকে গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে এমন বিপদের আশঙ্কা রয়েই গেছে।’
গ্রসি জানান, নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রের বাইরের অংশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে, যা পরিবেশ বা সাধারণ মানুষের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি। ফোরদো স্থাপনাতেও এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে তিনি বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বুশেহর ইরানের এমন একটি পারমাণবিক কেন্দ্র, যেখানে হামলা হলে তার পরিণতি সবচেয়ে মারাত্মক হতে পারে। এটি একটি সক্রিয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এখানে হাজার হাজার কেজি পারমাণবিক উপাদান মজুদ রয়েছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, বুশেহর কেন্দ্রে সরাসরি কোনো আঘাত তেজস্ক্রিয়তা পরিবেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কারণ হতে পারে।
তেহরানের পারমাণবিক গবেষণা চুল্লিতে হামলার পরিণতিও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করেন গ্রসি। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হামলায় তেহরান শহর এবং এর বিশাল জনগোষ্ঠী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার জন্য ব্যাপক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
আইএইএ প্রধান আরও জানান, নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুকূলে আসামাত্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শকদের কাজ পুনরায় শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘এটা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি যে ইরানের সকল পারমাণবিক উপাদান, বিশেষ করে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, সঠিক হিসাবে রয়েছে এবং সেগুলো অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সরানো হয়নি।’
বৈঠকে জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো বলেন, ‘আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ সংঘাত এবং মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, এই সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব এখনই দেখা যাচ্ছে। ইয়েমেনের হুথিদের ইসরায়েল অভিমুখে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ইরাকে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। তার মতে, ‘সংঘাত আরও বাড়লে তা পুরো অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।’
ডিকার্লো আরও বলেন, একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ এখনো আছে এবং এর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বেসামরিক নাগরিক ও স্থাপনায় হামলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন।