শিরোনাম:
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক কাতার-সম্পর্কিত মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দোহা। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ বিন মোহাম্মদ আল-আনসারি নেতানিয়াহুর মন্তব্যকে ‘নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ববোধের ন্যূনতম মানদণ্ড থেকেও বহু দূরে’ বলে অভিহিত করেছেন। শনিবার (৩ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান বলে মিডলইস্ট মনিটর জানিয়েছে।
আল-আনসারি বলেন, গাজায় চলমান আগ্রাসনকে ‘সভ্যতার রক্ষা’ হিসেবে চিত্রিত করা ঐতিহাসিকভাবে সেই সব শাসকগোষ্ঠীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি, যারা নিরপরাধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধকে ন্যায্য প্রমাণ করতে মিথ্যা কাহিনি ব্যবহার করেছে।
এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ৭ অক্টোবরের হামলার পর চলমান যুদ্ধকে ‘সভ্যতা বনাম বর্বরতার’ লড়াই হিসেবে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু। বিবৃতিতে কাতারকে ‘দ্বিমুখী নীতি’ বন্ধ করে হামাসের বর্বরতা নাকি সভ্যতার পক্ষে, তা স্পষ্ট করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। ইসরায়েল এই ‘ন্যায্য যুদ্ধে ন্যায্য পদ্ধতিতেই’ বিজয়ী হবে বলেও দাবি করা হয়।
এই বক্তব্যের জবাবে আল-আনসারি প্রশ্ন তোলেন, ‘১৩৮ জনেরও বেশি বন্দি কি ‘ন্যায়সঙ্গত’ সামরিক অভিযানের মাধ্যমে মুক্ত হয়েছিল, নাকি সেই মধ্যস্থতার মাধ্যমেই হয়েছিল, যাকে এখন অন্যায়ভাবে সমালোচনা ও দুর্বল করা হচ্ছে?’
তিনি আরও বলেন, কাতার শুরু থেকেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে, সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং জিম্মি বিনিময়ের মাধ্যমে সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
গাজার ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তুলে ধরে কাতারের মুখপাত্র বলেন, ওষুধ, খাদ্য ও আশ্রয়ের ঘাটতিসহ অবরুদ্ধ অবস্থায় ফিলিস্তিনিরা মানবেতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ট্র্যাজেডির মুখে পড়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এটিই কি সেই সভ্যতার মডেল, যার কথা প্রচার করা হচ্ছে?’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতেও (আইসিজে) দেশটির বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে।