!-- your other meta element -->
নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভারত থেকে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন’ (সিআরআই)। নয়াদিল্লিতে স্থাপিত একটি কার্যালয় থেকে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। অন্তর্বর্তী সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সাইবার আক্রমণ পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে সিআরআইয়ের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। পূর্বে এর দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় আইনগত কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ, যিনি নয়াদিল্লির অভিজাত এলাকা লুটিয়েন্স বাংলো জোনের নিকটবর্তী একটি দোতলা ভবন থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একই এলাকায় তার মা শেখ হাসিনাও বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) আঞ্চলিক পরিচালকের পদ থেকে সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠানো হয়।
সূত্রমতে, সিআরআইয়ের বর্তমান কার্যক্রমের তিনটি প্রধান লক্ষ্য রয়েছে: যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করা এবং বিএনপি-জামায়াতসহ গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। এর চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো, দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা, যার জন্য দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
এই সাইবার যুদ্ধ পরিচালনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ভিডিও ক্লিপ, বেনামি ফেসবুক আইডি, পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে। ‘প্রজন্ম ৭১’, ‘মঞ্চ ৭১’, ‘জয়বাংলা ব্রিগেড’, ‘নিউক্লিয়াস ৭১’ সহ শতাধিক প্ল্যাটফর্মকে এই প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের উপদেষ্টা, রাজনীতিবিদ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, সিআরআই এখন আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবী, টকশোর আলোচক, সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের সংগঠিত করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দিল্লির কার্যালয় থেকে তাদের আর্থিক সহায়তা ও বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দেওয়া, শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা সৃষ্টি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাত বাধানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, দেশের পরিস্থিতি যথেষ্ট অস্থিতিশীল করে তোলার পর প্রায় ২০ লাখ কর্মী-সমর্থক নিয়ে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ বা ‘যমুনা ঘেরাও’-এর মতো বড় ধরনের কর্মসূচি দিয়ে চূড়ান্তভাবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের চেষ্টা করা হতে পারে বলে সূত্রগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সিআরআই যাত্রা শুরু করে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে গত তিন মাস ধরে নতুন নেতৃত্বে ও নতুন কৌশলে এটি পুনরায় সক্রিয় হয়েছে।