শিরোনাম:

রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: টরাস ক্ষেপণাস্ত্র দিলে সরাসরি ইউক্রেন-যুদ্ধে জড়াবে জার্মানি

১০ লাখ টাকার চেক সঙ্গে সোনার মেডেল, ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রিয় শিক্ষককে বিদায়

চার মাসের সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মোবাইল কিনলেন মা

ভারতে মুসলিমদের ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিতে ঢাকার আহ্বানে যা বলল দিল্লি

নির্বাচনের আগে জামায়াত আমিরের তিন শর্ত

বিপাকে নেতানিয়াহু, যুদ্ধ করতে নারাজ সেনারা

ডেইলি রিপোর্টঃ
প্রকাশিত : এপ্রিল ১১, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসরায়েল-গাজা সংঘাত নতুন মোড় নিচ্ছে। এবার নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলি সেনাদের একটি বড় অংশ। যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অনেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন সামরিক বাহিনী থেকে। শুরু হয়েছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি—যেখানে হাজারো সেনা যুদ্ধ বন্ধ করে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন।

দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। শুরুতে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ হলেও, পরে তা ছড়িয়ে পড়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথিদের দিকেও। এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সিরিয়া ও তুরস্কের সঙ্গেও যেকোনো সময় সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।

এই ক্রমাগত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি সেনারা একরকম মানসিক ও শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ, হতাহত সহকর্মীদের স্মৃতি, ও যুদ্ধের নৃশংসতায় সেনারা চরম ক্লান্ত। অনেকে বাহিনী ত্যাগ করতে আবেদন করছেন, কেউ আবার ইচ্ছাকৃতভাবে আহত হওয়ার পথ বেছে নিচ্ছেন বাহিনী থেকে সরে দাঁড়াতে।

একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ ইসরায়েলি এখন যুদ্ধের বিপক্ষে। এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, জনগণ ও বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

যুদ্ধ বন্ধে সেনাদের মধ্যে শুরু হয়েছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। হাজারো রিজার্ভ সেনা ও সাবেক সদস্য এতে অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সরকার সেনাদের এই প্রতিবাদকে চাপা দিতে চেষ্টা করছে। দাবি করা হচ্ছে, যারা যুদ্ধের বিপক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই নাকি অবসরে থাকা বা কর্তব্যরত নন। সরকার আরও জানায়, সেনাদের মধ্যে “উগ্রপন্থী” ভাবাদর্শ ছড়িয়ে পড়ছে এবং এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমনিতেই যুদ্ধের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও জনজীবনের দুর্দশায় ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। প্রতিদিন ঘটছে সহিংসতা, বাড়ছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। অনেক গোয়েন্দা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এখন এক গভীর রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটে।

নতুন করে সেনা নিয়োগ ও রিজার্ভ সেনাদের ডাকলেও সরকার প্রত্যাশিত সাড়া পাচ্ছে না। অনেকেই বাহিনীতে যোগ দিয়ে আবার কিছুদিনের মধ্যেই সরে যাচ্ছেন।

ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ নীতির বিরোধিতা এখন শুধু আন্তর্জাতিক মহলে নয়, বরং দেশটির ভেতরেও দানা বাঁধছে। সেনাবাহিনীর একাংশের বিদ্রোহ এবং জনগণের বিরোধিতা নেতানিয়াহু সরকারের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি যদি এভাবেই অব্যাহত থাকে, তাহলে ইসরায়েলকে আরও বড় রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের মুখোমুখি হতে হতে পারে।

পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত