তুরস্কের আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরামের (এডিএফ) সাইডলাইনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ এ খানের সঙ্গে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয় এবং রোহিঙ্গা সংকটে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার ওপর জোর দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তারা ফিলিস্তিনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্য সংগ্রামে বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি জনগণের অবর্ণনীয় দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির ভূমিকার প্রশংসা করেন তারা।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। দুই উপদেষ্টা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সংকটের স্থায়ী সমাধানে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেন। তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইসিসির নেওয়া পদক্ষেপের জন্য সংস্থাটিকে ধন্যবাদ জানান।
আইসিসি প্রসিকিউটর করিম এ এ খান আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থা এবং রোম সংবিধির প্রতি বাংলাদেশের ধারাবাহিক সমর্থনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোম সংবিধি ও আইসিসির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইসিসির সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও আইসিসির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর ও জোরদার করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছে। বৈঠকে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক এবং উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তুরস্কের আনাতোলিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ফোরাম বিশ্বজুড়ে চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান খোঁজার একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে পরিণত হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ প্রায় ৪ হাজার অতিথি অংশগ্রহণ করছেন।