শিরোনাম:

রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: টরাস ক্ষেপণাস্ত্র দিলে সরাসরি ইউক্রেন-যুদ্ধে জড়াবে জার্মানি

১০ লাখ টাকার চেক সঙ্গে সোনার মেডেল, ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রিয় শিক্ষককে বিদায়

চার মাসের সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মোবাইল কিনলেন মা

ভারতে মুসলিমদের ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিতে ঢাকার আহ্বানে যা বলল দিল্লি

নির্বাচনের আগে জামায়াত আমিরের তিন শর্ত

‘ড. ইউনূসকে আরও ৫ বছর ক্ষমতায় চাই’— পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি

ডেইলি রিপোর্টঃ
প্রকাশিত : এপ্রিল ১২, ২০২৫

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারের পাশাপাশি মিলেছে অসংখ্য চিঠি। তার মধ্যে একটি চিঠিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় পাঁচ বছরের জন্য বসানোর আকুতি জানানো হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে পাগলা মসজিদের ১১টি লোহার দানবাক্স খোলা হলে অন্যান্য বস্তাবন্দী টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও অলংকারের সঙ্গে এ চিঠিটি পাওয়া যায়। দানবাক্স খোলার পর গণনার কাজে নিয়োজিতদের মধ্যে বিষয়টি সাড়া ফেলে।

গণনার কাজে নিয়োজিত একজন সদস্য জানান, হাতে লেখা এই চিঠিতে একজন ব্যক্তি নিজের নাম উল্লেখ না করে লিখেছেন, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় চাই, সাধারণ জনগণ, আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’গণনার কাজে অংশ নিয়েছে মসজিদ পরিচালনা কমিটি, মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের প্রায় ৭০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। সব মিলিয়ে ৩২০ জনের বেশি মানুষ এই কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। সার্বিক নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

এই গণনার কাজ শেষ হতে সময় লাগবে একাধিক দিন, এমনটাই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতো বিপুল পরিমাণ টাকা যেহেতু এসেছে সাধারণ মানুষের দান থেকে, তাই প্রতিটি পয়সা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে গণনা করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর দানবাক্স খোলা হয়েছিল, সেসময় সংগ্রহ হয়েছিল প্রায় ৮ কোটি ২১ লাখ টাকার মতো। এবার সেই অঙ্কও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অনুমান করছেন মসজিদ কমিটির সদস্যরা।

পাগলা মসজিদের দান নিয়ে বরাবরই রয়েছে নানা কৌতূহল। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন এখানে দান করে থাকেন, এবং অনেকেই বিশ্বাস করেন—এই মসজিদে দান করলে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়। এই বিশ্বাস ও ভক্তির কারণেই দিন দিন বাড়ছে দানের পরিমাণ।

দানের টাকাগুলো কেবল মসজিদের জন্যই নয়, বরং এর মাধ্যমে চলছে মাদ্রাসা, এতিমখানা ও ইসলামি কমপ্লেক্সের উন্নয়নমূলক কাজ। বর্তমানে ছয়তলা বিশিষ্ট এক বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে, যার ব্যয়ভারও বহন করছে এই দানের অর্থ।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাগলা মসজিদ এখন কেবল একটি ধর্মীয় উপাসনালয় নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। দেশের অন্যান্য মসজিদ ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলোও পাগলা মসজিদের এই প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করতে পারে স্বচ্ছতা ও স্বনির্ভরতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে।

সচরাচর প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপর মসজিদের দানবাক্স খোলা হয় এবং প্রতিবারই দেখা যায় বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হয়েছে। এই ধারা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে পাগলা মসজিদ দেশের অন্যতম দানবহুল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত