শিরোনাম:

রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: টরাস ক্ষেপণাস্ত্র দিলে সরাসরি ইউক্রেন-যুদ্ধে জড়াবে জার্মানি

১০ লাখ টাকার চেক সঙ্গে সোনার মেডেল, ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রিয় শিক্ষককে বিদায়

চার মাসের সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মোবাইল কিনলেন মা

ভারতে মুসলিমদের ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিতে ঢাকার আহ্বানে যা বলল দিল্লি

নির্বাচনের আগে জামায়াত আমিরের তিন শর্ত

খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিরকুট

ডেইলি রিপোর্টঃ
প্রকাশিত : এপ্রিল ১২, ২০২৫

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে পাওয়া যায় চিঠিও। এবারও মিলছে এমন নানা ধরনের চিঠি। নাম-পরিচয়হীন অজ্ঞাত এক ব্যক্তির চিঠিতে লেখা রয়েছে- ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির’ ‘হে মাবুদ, হে পাগলা মসজিদ, বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দাও। আর বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের সরকার বানিয়ে দাও। আমিন। ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ ‘বিএনপি জিন্দাবাদ’।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স ও ১টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়। এসময় সেনাবাহিনী, পুলিশ, এপিপিএন ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এর আগেও এমন বেশি কিছু চিরকুট পাওয়া গেছে পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে। কখনো প্রেমিকা জীবনসঙ্গীকে পেতে চিঠি লিখেন। মনোবাসনা পূরণের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায় সেসব চিঠিতে।

এমন আরেকটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যেখানে লেখা রয়েছে, ‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’।

আরেকটি চিঠিতে লেখা আছে, ‘হে আল্লাহ আমি বাংলাদেশ জামাতি ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চাই। হে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল কর। এটাই আমাদের মুসলিমদের চাওয়া, জামাতি ইসলাম, আমিন।’

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।

মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়।

জানা যায়, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে এই মসজিদে দান করছেন। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাদের মনের আশা পূরণ হয়েছে। আর এ কারণেই দিন দিন দানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, ‘গণনা শেষ হলে টাকার পরিমাণ জানা যাবে। দানবক্স থেকে পাওয়া সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে।’ জেলা প্রশাসক আরো জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়ে থাকে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, সকাল থেকে টাকার দান বক্স খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংক সমস্ত টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন দান বক্স নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। বর্তমানে ৩.৮৮ একর ভূমির উপর সম্প্রসারিত পাগলা মসজিদ এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক এই মসজিদকে নিয়ে জেলার ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলেই গর্ববোধ করেন।

মসজিদটিতে এবার আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত