শিরোনাম:

আবার ক্ষমতা পাবো তথন কোথায় যাবে

দুই সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করলেন মা

রাশিয়ার হুঁশিয়ারি: টরাস ক্ষেপণাস্ত্র দিলে সরাসরি ইউক্রেন-যুদ্ধে জড়াবে জার্মানি

১০ লাখ টাকার চেক সঙ্গে সোনার মেডেল, ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রিয় শিক্ষককে বিদায়

চার মাসের সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে মোবাইল কিনলেন মা

কবে আসছে কোরআনে বর্ণিত ইসরাইলের পতনের সেই দিন

ডেইলি রিপোর্টঃ
প্রকাশিত : এপ্রিল ১২, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসরাইল এখন সীমালঙ্ঘনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এই জাতিকে একাধিকবার সতর্ক করেছেন। বর্ণনা করেছেন—ইহুদি জাতি কীভাবে অতীতে সীমা লঙ্ঘন করায় ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের পতনের পূর্বাভাসও দিয়েছেন, যা আজ আবার বাস্তবতার রূপ নিচ্ছে।

ফিলিস্তিনের রক্তাক্ত ভূমি, শিশুদের কান্না, নারীদের আর্তনাদ আর বিশ্ব মুসলিমদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ—সব মিলিয়ে একটি প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে: “কবে আসবে সেই প্রতিশোধের দিন, যার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন কোরআনে?”

বনী ইসরাইল জাতি ইতিহাসে দুইবার দুনিয়ায় বড় ফিতনার জন্ম দেয়। কোরআন ও হাদীসে এসব ঘটনার ব্যাপারে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। মুসা (আঃ)-এর উত্তরসূরি ইউসা (আঃ)-এর নেতৃত্বে বনী ইসরাইল ফিলিস্তিন জয় করে এবং ১২টি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই বিভক্তি তাদের দুর্বল করে তোলে। সুযোগ বুঝে আসিরিয়ানরা একের পর এক রাজ্য দখল করে নেয়।

পরে তালুত (আঃ) ও দাউদ (আঃ)-এর মাধ্যমে বিজয় আসে। সুলাইমান (আঃ)-এর সময় এই সাম্রাজ্য সর্বোচ্চ বিস্তারে পৌঁছায়। প্রায় ১০০ বছর ধরে চলে এই শাসনকাল।

কিন্তু সুলাইমান (আঃ)-এর মৃত্যুর পর তার সন্তানদের মধ্যকার ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বনী ইসরাইল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে—উত্তরে “ইসরাইল” ও দক্ষিণে “জুদাইয়া”। এই বিভক্তিই তাদের পতনের সূচনা করে। কালো জাদু, জুয়া, নির্লজ্জতা ও ধর্ম থেকে বিচ্যুতি তাদের ঈমান ও জাতিগত শক্তিকে দুর্বল করে তোলে।

প্রথম ধ্বংস আসে ব্যাবিলোনিয় রাজা নেবুচাদনেজারের (নাবুখোদোনসর) হাত ধরে। তিনি ঈসা (আঃ)-এর জন্মের ৫৮৭ বছর আগে জেরুজালেম দখল করে নেন। ধ্বংস করেন আল-আকসা মসজিদ—যা জ্বিনদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল সুলাইমান (আঃ)-এর আদেশে। প্রায় ৬ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয় এবং ৬ লাখকে দাস হিসেবে বন্দী করে ইরাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ইতিহাসে একে বলা হয় “প্রথম ডায়াসপোরা”।

এই ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী পবিত্র কোরআনের সূরা বনী ইসরাইলে রয়েছে: > _“তোমরা দুনিয়ায় দুইবার ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং অহংকারে চরমে পৌঁছাবে। তখন আমি পাঠাব আমার কঠোর সৈন্যবাহিনী, যারা তোমাদের গৃহে প্রবেশ করে ধ্বংস করবে।”_ (সূরা বনী ইসরাইল: ৪-৫)

কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা ফের জেগে ওঠে। উজাইর (আঃ)-এর নেতৃত্বে তারা দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়। ইরানি রাজা সাইরাস দ্য গ্রেট ইহুদিদের নিজভূমিতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন। গড়ে ওঠে দ্বিতীয় ইহুদি শাসন, আগের চেয়েও প্রভাবশালী।

আল্লাহ তাদের দিয়েছিলেন ক্ষমা, সুযোগ ও সমৃদ্ধি। কোরআনে বলা হয় _“আমি তোমাদের সাহায্য করেছি সম্পদ ও সন্তান দিয়ে। তোমরা সংখ্যায় ও প্রভাবে শত্রুকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলে।”_

কিন্তু ক্ষমতা পেলেই তারা ফেরে অপকর্মে। জুয়া, জাদুবিদ্যা, নির্লজ্জতা আর ফাসাদে জড়িয়ে পড়ে তারা। এবার তাদের ওপর আসে রোমানদের শাসন। এই সময়েই জন্ম নেন ঈসা (আঃ)। বনী ইসরাইল তাকে নবী মানতে অস্বীকৃতি জানায় এবং হত্যার ষড়যন্ত্র করে।

ঈসা (আঃ)-এর জন্মের ৭০ বছর পর, রোমান সম্রাট টাইটাস জেরুজালেম অবরোধ করেন। ইতিহাসে বলা হয়, মাত্র একদিনে তিনি হত্যা করেন ১ লাখ ৩ হাজার ইহুদিকে, এবং ধ্বংস করে দেন মসজিদ আল-আকসা। এবার শুরু হয় দ্বিতীয় ডায়াসপোরা। ইহুদিরা পবিত্র ভূমি থেকে ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।

কোরআনে এই দ্বিতীয় শাস্তির কথাও এসেছে: _“তোমরা যদি ভালো পথে চলো, তা তোমাদের জন্যই। আর যদি ফের পাপ করো, তবে আমিও ফিরব শাস্তির দিকে।”_ (সূরা বনী ইসরাইল: ৭-৮)

ইহুদিরা ভাবতো শেষ নবী তাদের মধ্য থেকেই আসবেন। তারা মদিনার আরবদের বলত: _“শেষ নবী এলে আমরা তোমাদের পরাজিত করব।”_

কিন্তু যখন রাসূল মুহাম্মদ (সা.) এলেন—ইসমাইল (আঃ)-এর বংশ থেকে—তারা ঈর্ষা ও অন্ধতা বশত নবীকে অস্বীকার করে। এরপরই মুসলিমদের কিবলা বদলে দেয়া হয় আল-আকসা থেকে কাবা শরীফে। এর মাধ্যমে ইহুদিদের ঈমানী সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।

আজ ইসরাইল শিশু হত্যা, নারী নির্যাতন, অবরোধ, মসজিদ আক্রমণসহ দুনিয়াজুড়ে নতুন ফিতনার জন্ম দিচ্ছে। তারা ফের সেই পথেই হাঁটছে, যা অতীতে তাদের দুইবার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল।

এখন মুসলিম বিশ্ব অপেক্ষায়—আল্লাহর সেই তৃতীয় এবং চূড়ান্ত প্রতিশোধ কবে আসবে? আল্লাহ বলেন— _“যদি তারা ফিরে আসে (পাপে), তবে আমিও ফিরব (শাস্তিতে)।”_ (সূরা বনী ইসরাইল: ৮)

পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত