নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে যুক্ত হচ্ছে নতুন এক ইতিহাস। দেশে বসেই তৈরি হবে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. আশিক চৌধুরী।
বর্তমানে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রের প্রায় পুরোটাই আসে বিদেশ থেকে, যার পেছনে খরচ হয় বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। এবার সেই নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই সামরিক পণ্যের উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
“আমরা এখনই ট্যাংক বা মহাকাশযান বানাব না, কিন্তু আধুনিক স্মার্ট অস্ত্র, উন্নতমানের রেডিও, ছোট ক্যালিবারের গুলি, এমনকি ট্যাংকের যন্ত্রাংশ—এসব তৈরি এখন আমাদের পক্ষে সম্ভব।”
তিনি জানান, সরকার পরিকল্পনা করছে একটি ‘মিলিটারি ইকোনমিক জোন’ গড়ে তোলার, যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যৌথভাবে প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনে অংশ নেবেন।
এই উদ্যোগ শুধু প্রতিরক্ষা শিল্পে আত্মনির্ভরতা বাড়াবে না, বরং ভবিষ্যতে আঞ্চলিক রপ্তানিরও নতুন পথ খুলে দেবে। এমনকি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেই সরঞ্জাম কিনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও বড় পরিসরে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন তিনি।
সরকার চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান সংগ্রহের জন্য চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীনের J-10C যুদ্ধবিমান সংগ্রহের সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে।
এছাড়া সম্প্রতি তুরস্ক থেকে এসেছে হালকা কামান। প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং যৌথ সামরিক উৎপাদনে আগ্রহ দেখিয়েছে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রতিরক্ষা শক্তিধর তুরস্ক।
দেশের নিরাপত্তা জোরদার, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিরক্ষা খাতে এই রূপান্তর হয়ে উঠতে পারে এক ‘গেম চেঞ্জার’। এই উদ্যোগ শুধু সামরিক নয়, বরং অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে এক নতুন উচ্চতায়—আত্মনির্ভর, আধুনিক ও অংশীদারিত্বভিত্তিক এক শক্তিশালী রাষ্ট্রের পথে।